যে কোনো গবেষণা কর্মের জন্য প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে আপনার গবেষণার বিষয়টি সম্পর্কে. বিগত দুইটি পর্বে রিসার্চ প্রপোজাল লিখন এবং রিসার্চ টপিক নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছিলাম. আজকের টপিক হচ্ছে রিসার্চ পেপার কিংবা জার্নাল আর্টিকেল লিখার বিষয় নিয়ে.
অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন রিসার্চ পেপার/জার্নাল আর্টিকেল আর থিসিস এর মধ্যে পার্থর্ক্য কোথায়. থিসিস হচ্ছে মূলত একটি দীর্ঘ রচনা অনেকগুলো চ্যাপ্টার মিলে আর রিসার্চ পেপার হচ্ছে ছোট একটি রচনা যাতে থিসিসের মতো এত বিস্তারিত আলোচনা থাকে না. তবে হা, আপনার করা থিসিস থেকে আপনি একটু চেষ্টা করলেই রিসার্চ পেপার লিখতে পারবেন.
রিসার্চ পেপার কিংবা জার্নাল আর্টিকেল কি করে লিখবো অনেকেই জিজ্ঞেস করেন. আসলে রিসার্চ পেপার লিখার কোনো ধরা-বাধা নিয়ম নেই. তবে হা, সাধারণ কিছু জিনিস মেনে চললেই আপনি ভালো একটি পেপার লিখতে পারবেন.
রিসার্চ পেপার লিখার ক্ষেত্রে নিচের পরামর্শগুলো অনুসরণ করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে-
১. রিসার্চ পেপার লিখার ক্ষেত্রেই অনেকেই একটি ভুল করেন তা হলো আগে পেপার লিখেন তারপর জার্নাল ঠিক করেন যেটা তে পাবলিশ করার জন্য সাবমিট করতে হয়.
কিন্তু আপনি যদি ভালো পেপার করতে চান, তাহলে প্রথমেই কোথায় কোথায় আপনার রিসার্চ পেপারটি পাবলিশ করতে চান, এই রকম ৩-৪টি জার্নাল ঠিক করতে হবে এবং ওই জার্নালগুলোর বেশকিছু আর্টিকেল পড়তে হবে.
এই জিনিসটি করতে হবে আপনি যেখানে পাবলিশ করতে চাইছেন তাদের স্ট্যান্ডার্ড জানার জন্য. এটি জানার পর আপনাকে দৃতীয় ধাপে যেতে হবে.
২. রিসার্চ সহজ বিষয় ঠিকই , কিন্তু রিসার্চ এ ভালো করতে হলে বেশকিছু রিসার্চ আর্টিকেল পড়তেই হবে.
অনেকে আবার কোথা থেকে রিসার্চ আর্টিকেল পড়বেন তা নিয়ে চিন্তায় পরে যান. একটি সাধারণ নিয়ম হচ্ছে আপনি টপিকের নাম ধরে গুগল স্কলার (Google Scholar) এ সার্চ দিবেন.
তখন আপনি বেশকিছু আর্টিকেল পাবেন. সেগুলো পড়বেন তারপর যাবেন ssrn.com এ ওখানেও সার্চ দিয়ে বেশকিছু আর্টিকেল পাবেন, সেগুলো ভালো করে পড়বেন.
এইরকম ২০-৩০ টি আর্টিকেল পড়ার পর আপনার কাজ হবে, আর্টিকেলগুলোর একটি সামারি করা যেটা আপনি করবেন যা মূলত গত পর্ব ২ তে আলোচনা করা লিটারেচার রিভিউ ম্যাট্রিক্স.
এই ম্যাট্রিক্স থেকে আপনি সহজেই পূর্বের রিসার্চগুলোর সীমাবদ্ধতা জানতে পারবেন আর আপনার রিসার্চ এর জন্য গ্যাপও বের করতে পারবেন.
৩. তৃতীয় ধাপে আপনাকে আপনার রিসার্চ পেপারের একটি মোটামুটি ১ পৃষ্ঠার খসড়া তৈরী করতে হবে.
এই ধাপে আপনাকে মূলত রিসার্চ পেপারের টাইটেল, রিসার্চ অবজেক্টিভ, লিটারেচার রিভিউ ম্যাট্রিক্স, রিসার্চ মেথড, ডাটা এনালাইসিস এই জিনিসগুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা রাখতে হবে.
৪. এই ধাপটি হচ্ছে মূলত রিসার্চ পেপার লিখার শেষ ধাপ এই ধাপে আপনি রিসার্চ পেপারটি লিখা শুরু করবেন.
প্রথমেই আপনি রিসার্চ পেপারটির টাইটেল লিখবেন, তারপর ইন্ট্রোডাকশন/ব্যাকগ্রাউন্ড, তারপর লিটারেচার রিভিউ, তারপর রিসার্চ অবজেক্টিভ/হাইপোথিসিস, তারপর রিসার্চ মেথড, তারপর ডাটা এনালাইসিস এন্ড ডেসক্রিপশন এবং সবশেষে আপনাকে দিতে হবে কনক্লুশন.
কনক্লুশন লিখার পর পুরো লিখার উপর ভিত্তি করে আপনাকে একটি অ্যাবস্ট্রাক্ট লিখতে হবে রিসার্চ পেপারের টাইটেল এবং ইন্ট্রোডাকশন এর মাঝামাঝি জায়গায়.
যে কোনো রিসার্চ পেপার লিখার জন্য সব জার্নাল এর বেশকিছু নিয়ম-কানুন থাকে. তাই নিজ থেকে আগেই ওই গুলো জেনে তারপর পেপার লিখে সাবমিট করবেন. সবার সফলতা কামনা করছি.
\our efforts never betray us\
নূর-আল-আহাদ
বিবিএ (ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকা) ১৪ তম ব্যাচ
এমবিএ (ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া)
ফিনান্সিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং গবেষক (জাপান)